মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকের উপর বর্বরোচিত হামলা ও মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গজারিয়ায় পুলিশ-সাংবাদিককে মারধর
শুক্রবার (১০ মে) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজিব খান বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় একজন সংবাদকর্মীর উপর হামলা ন্যাক্কারজনক।
হামলা ও মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাত ১১ টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুলকে প্রধান করে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলার আসামিসহ জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন হামলার শিকার সাংবাদিক গোলজার হোসেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক গোলজার হোসেন দৈনিক মানবজমিনের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি এবং মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সংঘর্ষে আহত ১
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকরা জানান, গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনারস প্রতীকের প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থক ছিলেন হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক ও তার ভাই গাজীপুর আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইকবাল হক স্বপন, ভাতিজা তানভীর হক ও তাদের লোকজন।
ভোটের দিন সকাল ৯ টার দিকে ইউনিয়নটির ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রভাব বিস্তার করতে কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হচ্ছিলেন। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য সোহেল রানা সবাইকে সরে যেতে বলেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যান মনিরুল হকের নির্দেশে সোহেলকে মারধর শুরু করেন তার ভাতিজা তানভীর এবং তাদের লোকজন। এ সময় পাশ থেকে ছবি তুলছিলেন ও ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক গোলজার হোসেন।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ৩ উপজেলায় বৃষ্টির বাধা
পরে তারা সোহেলকে রেখে সাংবাদিক গোলজারের ওপর হামলা করেন। এ সময় তার মুঠোফোন, পকেটে থাকা টাকা, আইডি ও পর্যবেক্ষেক কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে মারধর করতে থাকে। পরে অন্য সাংবাদিকেরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এ সময় সাংবাদিকেরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে আশ্রয় নিলে সেখানে তাদের অবরুদ্ধ অবস্থায় মারধরের জন্য তেড়ে আসেন মনিরুল হক ও তার লোকজন।
মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রের ভেতরে মনিরুল হক ও তার লোকজন প্রবেশ করার সময় সাংবাদিকদের হাত কেটে ফেলার হুমকি দেন। সেখানে মনিরুল হক হুংকার দিয়ে বলেন, দুই-চারজন সাংবাদিক মেরে ফেললে কী হবে?
আরও পড়ুন: সকালে রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি
ওই দৃশ্য ভিডিও করতে গেলে মাই টিভির সাংবাদিক ও প্রথম আলোর প্রতিনিধির মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন মনিরুল হক। পরে মারধরের শিকার সাংবাদিক গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে গত বুধবার (৮ মে) গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সান নিউজ/এনজে