মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়াতে একটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যকে মারধর করেছে আনারস প্রতীকের সমর্থক ও ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু এবং তার সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: ২০ মিনিটেও পড়েনি ভোট
এ সময় ঘটনাটির ছবি তুলছিলেন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেন। এতে চেয়ারম্যানের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে তাকে আহত করে।
সেই সঙ্গে কেন্দ্রের ভেতরে থাকা কমপক্ষে ৭ জন সাংবাদিককে প্রায় আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
বুধবার (৮ মে) সকাল সোয়া ৯ টার দিকে গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের ভবানিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার সাংবাদিক গোলজার হোসেন মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনার কবলে ইউএনও
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মনিরুল হক মিঠু হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মারধরের ঘটনায় নেতৃত্বে ছিলেন মিঠু চেয়ারম্যানের ভাতিজা তানভীর হক তুরিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটকেন্দ্রের বাইরে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলামের সমর্থক মনিরুল হক মিঠু তার লোকজন নিয়ে জড়ো হচ্ছিল। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার শঙ্কায় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ সদস্য মো. সোহেল সবাইকে সরে যেতে বলেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় মিঠু ও তার লোকজন। ঘটনাটির পাশ থেকে ছবি এবং ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক গোলজার হোসেন।
আরও পড়ুন: ইভিএমে ভোটারদের ভোগান্তি
পরে পুলিশকে রেখে সাংবাদিকের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মারধর করতে থাকেন মিঠু ও তার লোকজন। পরবর্তীতে অন্যান্য সাংবাদিকরা এসে আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করেন।
খবর পেয়ে একাধিক সাংবাদিক ভোট কেন্দ্রের ভেতরে আশ্রয় নিলে পুলিশের উপস্থিতিতেই তাদের মারধর করতে তেরে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু ও তার ভাতিজা তুরিনসহ অন্যান্য লোকজন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৈনিক মানবজমিনের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেন বলেন, ভোটকেন্দ্রের পাশে পুলিশকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে মারধর করছিল চেয়ারম্যান মিঠুরা।
আরও পড়ুন: আজ হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন
সে ঘটনার ছবি ও ভিডিও করায় আমাকের শার্টের কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে একটি দোকানের ভেতর ঢুকিয়ে মারধর করা হয়। এ সময় আমার হাতে থাকা ফোন ছিনিয়ে নিয়ে সব ছবি, ভিডিও মুছে দিয়ে ফোনটি ভেঙে ফেলা হয়।
মারধরের শিকার পুলিশ সদস্য কনস্টেবল মো. সোহেল রানা বলেন, কেন্দ্রের পাশে একটি দোকান ছিল। সেখানে আনারস প্রতীকের সর্মথকরা জড়ো হচ্ছিল। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আমি তাদেরকে সরে যেতে বলি। সে সময় আনারসের সমর্থকরা আমার উপর হামলা চালায়। সাংবাদিক ছবি তোলায় তাকেও মারধর করে তারা।
একপর্যায়ে মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রের ভেতরে মনিরুল হক মিঠু লোকজন নিয়ে প্রবেশ করে সাংবাদিকদের হাত কেটে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: বিএসএফের গুলিতে নিহত ২
২/৪ জন সাংবাদিক মেরে ফেললে কি হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন মিঠু। সে ঘটনা ভিডিও করতে গেলে দ্বিতীয় দফায় মাইটিভি ও প্রথম আলোর সাংবাদিককের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন মিঠু ও তার লোকজন।
কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রতন বৈরাগীর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা এড়িয়ে যান। আপনাদের উপস্থিতিতে এতো ঘটনার পরও কেন ন্যূনতম ব্যবস্থা নিলেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে কিছুই হয়নি। সব ঠিক আছে। এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে পারবো না।
মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আসলাম খান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এনজে