নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে ৮ দিনব্যাপী ঢাকা বিভাগীয় বইমেলা চলছে। আজ এ মেলার পঞ্চম দিন।
আরও পড়ুন: ইতিহাসের এই দিনে সংবিধান গণপরিষদে উত্থাপন
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় এবং ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত বাংলা একাডেমি চত্বরে এ মেলা চলবে প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
৮ দিনব্যাপী এ মেলায় অংশ নিয়েছে সরকারি বিভিন্ন দফতরের ২৫ টি প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশের স্বনামধন্য ৬৫ টি প্রকাশনা।
পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুইজ, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা সভা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব দৃষ্টি দিবস
মেলা চলাকালে প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪ টায় থেকে মেলার প্রাঙ্গনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩ টায় বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও সোনার বাংলা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ভাষানটেক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. হান্নান মিয়া।
আরও পড়ুন: মুজিব বায়োপিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন
এ মেলায় রয়েছে সারি সারি ১৩ জেলার বইয়ের স্টল। এর মধ্যে কোনোটি প্রদর্শনী, কোনোটি বিক্রি, কোনোটি আবার কেবল প্রদর্শনীর জন্য।
ঢাকা বিভাগীয় বই মেলায় ঢাকার ১৩ জেলার ১৩ স্টলে শুধু জেলা কেন্দ্রিক ও সেই জেলার লেখকের বই পরিবেশন করা হয়েছে।
মেলায় অন্যান্য স্টলগুলোতে পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি সেই অর্থে না থাকলেও ১৩ জেলার স্টলে তাদের উপস্থিতি কিছুটা রয়েছে। সবার আগ্রহের কেন্দ্র ছিলো জেলার ইতিহাস, ঐহিহ্য ও সেই এলাকার লেখকদের বই।
নরসিংদী জেলার বইয়ের স্টলের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী রবিউল ইসলামের সাথে কথা হয়। রবিউল বলেন, আমার বাসা নরসিংদী হওয়ায় বই দেখছি। কিছু বই কেনারও ইচ্ছে আছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আজ
মাদারীপুর জেলা স্টলে সামনে আরেক দর্শনার্থী গোলাম রাব্বানী বলেন, জানতে পারলাম বাংলা একাডেমিতে বইমেলা চলছে। সচারাচর ফেব্রুয়ারিতে একুশে বই মেলাতে আসা হয়।
এ বইমেলায় তুলনামূলক কম বই এনেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানরা। তবে ঢাকা বিভাগের ১৩ টি জেলার ১৩ টি স্টল মেলাতে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। যারা ঢাকা বিভাগের, তারা বিভাগের ১৩ জেলা সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।
ঢাবির এ শিক্ষার্থী বলেন, আমার কাছে বাংলা একাডেমির এ বইমেলা জুড়ে অনেকটা পুরো ঢাকা বিভাগ মনে হয়েছে। এখানে বইগুলোতে বিভিন্ন জেলার ইতিহাস-ঐহিত্য-সংস্কৃতি বোঝার জন্য পর্যাপ্ত।
আরও পড়ুন: ৭ অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা
তবে মেলা কর্তৃপক্ষ নিকট আবদেন থাকবে, বইয়ের প্রদর্শনীর তুলনায় যেন বই বিক্রি বাড়ানো উদ্যোগ গ্রহণ করা। কারণ অনেক বই পছন্দ হয়ে গেলেও বই কেনার সুযোগ থাকছে না। বলা হচ্ছে, এসব বই কেবল প্রদর্শনীর জন্য।
মানিকগঞ্জ জেলার স্টলের দায়িত্বে জেলা প্রশাসনের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুন রেজা জানান, আমরা মেলাতে ১০০-এর মতো বই এনেছি। এর মধ্যে কোনোটি বিক্রির, কোনোটি আবার শুধু প্রদর্শনীর জন্য।
নরসিংদী জেলা স্টলের দায়িত্বে থাকা জেলার গিরিশ চন্দ্র সেন পাঠাগারের সভাপতি শাহিনুর মিয়া জানান, আমরা মেলাতে আমাদের জেলা ও জেলার লেখকদের নিয়ে ১০০০-এর মতো বই এনেছি। এর মধ্যে ৪২ জন লেখকের বই রয়েছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরের পৌর মেয়রের কারাদণ্ড
তিনি বলেন, আমাদের স্টলের সব বই বিক্রির জন্য। কেবল প্রদর্শনীর জন্য কোনো বই রাখা হয়নি। মেলা শুরু আগে থেকে আমরা জেলার লেখকের কাছ থেকে বই সংগ্রহের জন্য আহ্বান করেছিলাম। অনেক লেখক নিজ দায়িত্বে তাদের বই দিয়ে গেছেন।
এছাড়া ঢাকা জেলা বই স্টলের দায়িত্বে থাকা ক্যান্টনমেন্ট ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সালাউদ্দিন নাজের বলেন, মেলায় বিক্রির জন্য ১৬৪ ও প্রদর্শনীর জন্য ৬০ টিসহ মোট ২২৪ টি বই আনা হয়েছে। মেলায় দর্শনার্থী ও পাঠক উপস্থিতি অনেক কম। আশা করছি বন্ধের দিনগুলোতে তাদের জনসমাগম বাড়বে।
আরও পড়ুন: মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৪২
এর আগে শনিবার (৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩ টায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এ বইমেলার উদ্বোধন করেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পরিচালক মিনার মনসুর, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিবুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
সান নিউজ/এনজে