নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ বাংলা সাহিত্যের ধ্রুবতারা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্মজয়ন্তী। তার রচিত কবিতা, গান, উপন্যাস ও গল্পে বাঙালি জেনেছে বীরত্বের ভাষা, দ্রোহের মন্ত্র। বাঙালির আবেগ-অনুভূতিতে গভীরভাবে জড়িয়ে আছেন তিনি।
আরও পড়ুন : কাজী নজরুল ইসলাম’র জন্মদিন
এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ : বঙ্গবন্ধু চেতনার শানিতরূপ।’ নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক। তিনি প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেছেন এবং তার বেশিরভাগ গানের সুরকারও তিনি। গানগুলো নজরুল সংগীত নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন : সমাচার দর্পণ প্রথম প্রকাশিত
১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার ডাকনাম দুখু মিয়া। ১৯০৮ সালে মাত্র নয় বছর বয়সে বাবাকে হারান তিনি।
কাজী নজরুল অল্প বয়স থেকে লোকসংগীত রচনা শুরু করেন। ১৯১৭ সালের শেষভাগ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত কর্মজীবনে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সৈনিক করপোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদারের পদে উন্নীত হন তিনি। যুদ্ধ শেষে তিনি কলকাতায় সাহিত্য ও সাংবাদিকতা শুরু করেন।
আরও পড়ুন : স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সম্প্রচার শুরু
১৯২২ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটির মধ্য দিয়ে সারা ভারতে সাড়া ফেলেন নজরুল। ঐ বছর ২৩ নভেম্বর তার ‘যুগবাণী’ প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত হয় এবং কুমিল্লা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নেওয়া হয়।
১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি কাজী নজরুল আত্মপক্ষ সমর্থন করে চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে জবানবন্দি দেন। এ জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ নামে বিশেষ সাহিত্য মর্যাদা লাভ করে।
আরও পড়ুন : ক্রিস্টোফার কলম্বাস’র প্রয়াণ
১৯২১ সালের মাঝামাঝি কুমিল্লার প্রমীলা দেবীর সাথে কাজী নজরুল প্রণয় থেকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মধ্যবয়সে পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারান তিনি। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে তাকে বাংলাদেশে আনা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন এই বিদ্রোহী কবি।
কর্মসূচি :
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ভোর সাড়ে ৬ টায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিদ্রোহী কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। মূল অনুষ্ঠান বিকাল ৩ টায় নজরুল স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন : দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল উদ্বোধন
তিন দিনের এ আয়োজন উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। এছাড়া স্মারক বক্তৃতা করবেন প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। সম্মানীয় বক্তা হিসাবে থাকবেন জাতীয় কবির দৌহিত্রী খিলখিল কাজী। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি।
ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ দিবস উপলক্ষে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
এছাড়া নজরুল মেলা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উৎসবমুখর করতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। সেই সাথে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করবে।
আজ জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
আরও পড়ুন : ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চ দিবস
দিবসটি উপলক্ষ্যে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, শিল্পকলা একাডেমি, ছায়ানটসহ নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
সান নিউজ/এনজে