আন্তর্জাতিক ডেস্ক : না ফেরার দেশে চলে গেলেন কালপুরুষ, কালবেলাসহ একাধিক কালজয়ী উপন্যাসের লেখক প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার (৭৯)। বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি।
সোমবার (৮ মে) ভারতের স্থানীয় সময় পৌনে ৬টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই কথা সাহিত্যিক মারা যান।
সমরেশ মজুমদারের বড় মেয়ে দোয়েল মজুমদার গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় জানান, গত দুই দিন কেবিনেই তার বাবাকে রাখা হয়েছিল। ওই দিন বিকেলে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউতে) স্থানান্তরিত করা হয়।
গভীর সংক্রমণ ছিল সমরেশ মজুমদারের শ্বাসনালীতে। তিনি গত এক যুগ ধরেই ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) সমস্যায় ভুগছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে সাহিত্য জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।’
১৯৪২ সালের ১০ মার্চ সমরেশ মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেডএর সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি।
গ্রুপ থিয়েটারএর প্রতি তার প্রচণ্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প ‘অন্যমাত্রা’ লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসেবে, আর সেখান থেকেই তার লেখকজীবনের শুরু। দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে তার লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিলো। দেশেই ১৯৭৫ সালে প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ ছাপা হয়েছিলো।
কথা সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
তার ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।
১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইআইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন সমরেশ মজুমদার।
চিত্রনাট্য লেখক হিসেবে জয় করেছেন বিএফজেএ দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির অ্যাওয়ার্ড। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়।
সান নিউজ/এইচএন