আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যে বাড়িতে থেকে গীতাঞ্জলির কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। লন্ডনের সেই বাড়িটি এবার বিক্রি হতে চলেছে। এর আগে ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডন সফরে গিয়ে বাড়িটি সরকারিভাবে কিনে নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তখন তা সম্ভব হয়নি। কারণ বাড়িটি ছিলো হেরিটেজ। এবার সেই বাড়িই হতে চলেছে ব্যক্তিগত সম্পত্তি। যুক্তরাজ্যের গোল্ডস্মিথ অ্যান্ড হাওল্যান্ডের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে এই ঐতিহাসিক বাড়ি বিক্রি করার কাজ।
বাড়ির মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ২৭ লাখ পাউন্ড, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ৩১ কোটি টাকা। এত দিন পর্যন্ত বাড়িটি ‘হেরিটেজ’ হিসেবেই ঘোষিত ছিলো। ব্রিটিশ সরকারের তরফে ফলক বসিয়ে ইতিহাসকে ধরে রাখা হয়েছিলো। ওই হেরিটেজ ট্রাস্টের রক্ষণাবেক্ষণের মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে শেষমেশ রবি ঠাকুরের বাড়িটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে চলেছে।
১৯১২ সালে ইংল্যান্ডে যান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড হেলথের ৩ নম্বর ভিলায় থেকেছিলেন তিনি বেশ কয়েক মাস। ওই বাড়ির খুব কাছেই থাকতেন ব্রিটিশ শিল্পী ও লেখক স্যার উইলিয়াম রটেনস্টাইন। তিনি ওই ভিলায় প্রায়ই কবির সঙ্গে গল্প করতে আসতেন। তাঁদের সেই আড্ডাতেই নাকি উঠে এসেছিলো গীতাঞ্জলির কথা। গীতাঞ্জলির কবিতা শুনে মুগ্ধ হয়ে যান রটেনস্টাইন।
পরে ওই বাড়িতেই গীতাঞ্জলির ১০৩টি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ করেন রবি ঠাকুর, তা পাঠানো হয় নোবেল কমিটির কাছে। ১৯১৩ সালে সে জন্যই রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পান। এরপর ১৯৩১ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ বেশ কয়েকবার কাটিয়েছেন তাঁর প্রিয় লন্ডন হাউসে। সেই হিসেবেই এই বাড়িটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। এখন বাড়িটির মালিকানা ব্যক্তিগত হাতে চলে গেলে যে তাঁর মর্যাদা একই থাকবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। সূত্র: দ্য ওয়াল।
সান নিউজ/এফএআর