সান নিউজ ডেস্ক: কাগজের ফুল আর কখনও সত্যিকারের ফুল হয়ে ফুটবে না। সুবাসও ছড়াবে না কোনদিন। আরেকটা মাটির ময়না কেউ নিমার্ণের সাহস দেখাতে পারবে না। ভ্রান্ত সমাজ কিংবা ভ্রষ্ট নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে কেউ গাইবে না মুক্তির গানও। সেই সামর্থ্য আর সাহসটুকু শুধু তারেক মাসুদের ছিল। তারেক মাসুদ তাই গৌরব আর আক্ষেপের অপূর্ব এক সংমিশ্রণ হয়েই বেঁচে আছেন আমাদের হৃদয়ে।
আজ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আশফাক মিশুক মুনীরের চলে যাওয়ার ১০ বছর।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। একই দুর্ঘটনায় আরও তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল।
তারেক মাসুদ, তার সহধর্মিণী ক্যাথরিন মাসুদ, আশফাক মিশুক মুনীরসহ ৯ সদস্যের একটি দল ‘কাগজের ফুল’ নামে একটি নতুন চলচ্চিত্রের লোকেশন দেখতে যান মানিকগঞ্জ। সেখান থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন ‘মাটির ময়না’র পরিচালক তারেক মাসুদ। ১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে ‘আদম সুরত’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তারেক মাসুদের নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’(১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।
শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিওগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সবার কাছে মিশুক মুনীর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন দেশে টেলিভিশন সাংবাদিকতার এই পথিকৃৎ। ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণকারী মিশুক মুনীরের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে।
নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করে সরকার।
সান নিউজ/এমএম