স্বর্ণা ভূঁইয়া:
এই শুনো, বললো খেয়া। আমাদের সন্তান কার মত হবে? শুনে মুচকি হেসে দিলাম আমি। আর কার মত হবে? তোমার মত সুন্দর আর সভাবটা হবে আমার মতো। না না,, তোমার মত নাক টা বুঁচু হবে চোখ গুলো হবে আমার মত মায়াবী বললো খেয়া। তোমার মত দাঁত উঁচু আর থাঁবড়ানো হবে না।
খেয়ার এসব পাগলামি দেখে হাসি পায় আমার। ৭ মাসের অন্তঃ সত্তা ও। খেয়া : ব্ড় হলে ওকে আমরা সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়াবো।
আমি বললাম না,, ও ডাক্তার হবে। অবশেষে পরাজিত হয়ে খেয়ার কাছে হার মানতেই হল।
খেয়া : মেয়ে হলে নদী,আর ছেলে হলে নীল রাখবো।
জাহিদ: যা বলবেন মহারানি।শুনে মুচকি হেসে রান্না করতে চলে গেল খেয়া।
খেয়া : মা অনেকদিন হল তার মেয়ের বাসায় গেছে। এত দিন কেও থাকে? এভাবেই বাইরের অবস্থা ভাল না। চারিদিকে এত গোলাগুলি। পরিস্থিতি খারাপ।আমার অনেক ভয় করে একা বাসায়। এমনিতেই তুমি কোন অপারেশন এর কাজে চলে যাও।
তোমাকে নিয়ে ও ভয় হয়। জাহিদ হল গেরিলা বাহিনীর নিয়মিত সদস্য।
জাহিদ : কোন ভয় পেও না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। খেয়ার কাল জন্মদিন। ক্রিং ক্রিং ওপাশের টেলিফোন টা বেজে উঠলো।
হ্যালো, স্যার কালকে একটা জরুরি অপারেশন এর কাজে যেতে হবে।
জাহিদ : খেয়া আমাকে কালকে একটা অপারেশন এর কাজে যেতে হবে। তুমি ভয় পেও না।
খেয়া : কালকে না গেলে হয় না? তুমি কিছু একটা ভুলে যাচ্ছ। জাহিদ ভালো করেই যানে কাল খেয়ার জন্মদিন। খেয়া কে সারপ্রাইজ দিবে।
জাহিদ। ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮ঃ১০ মিনিট। একদল পাকিস্তানিরা খেয়ার ঘর এ ঢুকলো।
পাকিস্তানিরা : তোর হাসবেন্ড কে অনেকদিন ধরেই খুঁজছি। তারে পাই নাই ত কি হয়েছে? এবার মরার জন্য প্রস্তুত হ।
খেয়া : আমাকে মেরো না। আামার পেটের মধ্যে অনাগত সন্তান লালিত হচ্ছে। তার কথা ভেবে আমাকে মেরো না।ডুকরে কেদে উঠলো খেয়া।
টুশ টুশ মাটিতে লুটিয়ে পরলো খেয়া।
জাহিদ খবর পেয়ে ঘর এ ঢুকতে ই দেখে খেয়ার রক্তাক্ত মৃতদেহ মাটিতে পরে আছে। বলেছিল আজ সারপ্রাইজ দিবে খেয়ার মৃতদেহ দেখে কান্নায় লুটিয়ে পরে জাহিদ। আজ সাধিনতার ৪৯ বছর পার হয়ে গেল।
২৯ সেপ্টেম্বর এই দিনেই খেয়ার জন্মদিন ছিল আর এইদিনেই খেয়া মারা যায়।দেশ কে সাধীন করতে পারলেও পারে নি তার অনাগত সন্তান আর ওয়াইফ কে রক্ষা করতে। কোন তরুন কে দেখলেই জাহিদ ভাবে আজ যদি তার সন্তান বেচে থাকতো এমন বড় হতো। জীবনের সব কিছুই তার জীবনে অপূর্নতা রয়ে গেল।
স্মৃতির কারাগারে আজ সে বন্দি!
লেখক-শিক্ষার্থী , জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়