খালিদ বিন আনিস:
চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যিনি গোটা চলচ্চিত্র তো বটেই এমনকি পুরো ভারতীয় সিনেমার প্রেক্ষাপটকেই বদলে দিয়েছিলেন। তিনি হলেন সবার প্রিয় বাঙালি কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়।
এক বাঙালি কিংবদন্তি যিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার এবং লেখকও। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই মানুষটির জন্ম ১৯২১ সালের ২ মে, কলকাতায়।
সাহিত্য আর শিল্পের জগতে প্রসিদ্ধ পরিবারেই তার জন্ম। আজ থেকে শতবর্ষ আগে এমনই এক দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন পথের পাঁচালি চলচ্চিত্রের এই স্রষ্টা।
শুধু চলচ্চিত্র নির্মাতাই নন, একাধারে চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক, লেখক, গ্রাফিক্স ডিজাইনার.. সব গুণাবলী ছিল এই মানুষটির মধ্যে।
১৮৪৮ সালে পরিচালক ভিত্তোরিও ডি সিকা'র 'দ্যা বাইসাইকেল থিভস' থেকেই তিনি অনুপ্রাণিত হন 'পথের পাঁচালি' তৈরিতে। অনুপ্রেরণা রূপ নেয় সিদ্ধান্তে। সেখান থেকে নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে সামনে আসে সত্যজিৎ'এর স্বপ্নের ছবি 'পথের পাঁচালি'।
ভাগ্যিস তিনি বানিয়েছিলেন! কেননা, এই একটি ছবিই বাংলা চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটকেই বদলে দিয়েছিল। এই একটি চলচ্চিত্র গোটা ভারতের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব মহলে বাংলা চলচ্চিত্রকে এক অনন্য শ্রদ্ধার স্থানে তুলে ধরেছিল। এনে দিয়েছিল অস্কারের মতো পুরষ্কারও!
শুধু কি তাই, বাংলা সাহিত্যেও সুকুমারের যোগ্য উত্তরাধিকারী যে সত্যজিৎ রায়! তার সাহিত্য ভাণ্ডারের অমর দুই চরিত্র'কে চেনে না, বাঙালিদের মধ্যে এমন পাঠক খুঁজে পাওয়া কঠিনই হবে।! সত্যসন্ধানী 'ফেলুদা'কে নিয়ে তার যেমন ছিল বাস্তবতার কঠিন গলি-ঘুচির সন্ধানের প্রয়াস, তেমনই আবার প্রফেসর শঙ্কুকে নিয়ে তিনি পাড়ি জমাতেন কল্পনার নানা জগতে। তিনি একাই নন, সম্মোহনের ভেলায় ভাসিয়ে নিয়ে যেতেন বাঙালি ছোট-বড় সব পাঠককেও।
শুধু কি কল্পবিজ্ঞান আর সত্যসন্ধান নিয়েই সত্যবাবুর লেখালেখি ছিল? একদমই না, তারিণী খুড়োর মতো চরিত্র সৃষ্টি করে পাঠককে তিনি নিয়ে গেছেন ভৌতিক ব্যাখ্যাতীত জগতেও।
জন্ম শতবর্ষে অতল শ্রদ্ধা তোমায় হে সত্যজিৎ রায়!