হাসনাত শাহীন: আপামর মানুষের প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র বাকি আর মাত্র ১০ দিন। কারোনা ভাইরাসে সৃষ্ট বৈশ্বিক মাহামারির কারণে ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে আগামী ১৮ মার্চ শুরু এবং ১৪ এপ্রিল শেষ হতে যাওয়া এবারের বইমেলা আয়োজন উপলক্ষে এখন চলছে জোর প্রস্তুতি।
সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সোমবার (৮ মার্চ) অনুষ্ঠিত হলো ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১’-এ যেসব প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে তাদের জন্য স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দের লটারি।
গ্রন্থমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এবারের লটারি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৫২২টি প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে মোট ৮১৭ ইউনিটের স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। লটারির পরেই প্রকাশকরা তাদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন বুঝে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ সান নিউজকে জানান, মঙ্গলবার (৯ মার্চ) থেকে বাংলা একাডেমির তৈরি স্টল ও প্যাভিলিয়নের অবকাঠামোতে নিজ নিজ স্টল ও প্যাভিলিয়নের সাজ-সজ্জা ও বিন্যাসের কাজ শুরু করবেন মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন প্রাপ্তরা সকল প্রকাশনা সংস্থা ও সরাকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে এবারের বইমেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন প্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে তাদের স্টল ও প্যাভিলিয়নের কাজ শেষ করতে হবে।
বরাবরের মতো এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে জ্ঞান ও সৃজণশীল প্রকাশক সমিতির স্টল ও প্যাভিলিয়ন। আর বাংলা একাডেমিতে থাকবে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন মিডিয়ার স্টল ও প্যাভিলিয়ন।
‘হে স্বাধীনতা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বইমেলা। আর এবারের মেলা সাক্ষী হবে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীর। তাই এ দুটি বিষয়কে সামনে রেখেই মেলার কাঠামোগত সাজসজ্জা করা হবে। মেলার দুই ক্যানভাস সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের নানা উপজীব্যকে ফুটিয়ে তোলা হবে। এবারের মেলার নকশা প্রণয়নে কাজ করছেন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর। করোনাভাইরাসের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে প্রকাশকদের দাবির প্রেক্ষিতে কমানো হয়েছে মেলার স্টল ভাড়া। বরাবরের মতো এবার ১৮ মার্চ বিকেলে বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বইমেলার মূল আয়োজন থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। মূলত এখানেই দেশের নামকরা প্রকাশনা সংস্থাগুলো তাদের নতুন-পুরোনো বইগুলো তুলে ধরবে পাঠকদের জন্য।
সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও মেলার অপর অংশ বাংলা একাডেমির আঙিনা ঘুরে চোখে পড়েছে মেলাকেন্দ্রিক নানা কর্মযজ্ঞ। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এবারের বইমেলার নান্দনিকতা বাড়াতে এবং পাঠকের সুবিধার্থে কিছু নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব জালাল আহমেদ সান নিউজকে বলেন, ‘পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি এবারের মেলায় যে বিষয়টিকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি, সেটি হচ্ছে মেলার নান্দনিকতা এবং করোনার বিধি-নিষেধের উপর। আমরা বিশ্বাস করি, সকলের সহযোগিতায় প্রতিবারের মতো এবারের এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই একটি পরিকল্পিত ও সুন্দর মেলা উপহার দিতে পারবো।’
সান নিউজ/আরআই