সান নিউজ ডেস্ক:
লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদি সরিয়ে পুনর্নির্মাণের কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী জজ (সদর) আদালতের বিচারক সুরাইয়া বেগম এই আদেশ দেন। এ আদেশে লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টুকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে একটি নালিশি মামলার শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।
মামলার বাদী লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক সৈয়দ সুফি তাহেরুল ইসলাম ওই আদালতে দায়ের করা এক নালিশি মামলায় অভিযোগ করেন, লালমনিরহাটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি পুনর্নির্মাণের নামে এর মূল বেদি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং শহীদ মিনার চত্বরের ভেতরে এক কোনায় স্থাপন করা হচ্ছে। মূলত শহীদ মিনারের পেছনের এক ভবনের মালিককে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ৪৮ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত শহীদ মিনারটির বেদি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণ করা হলেও এর কোনও নকশা প্রদর্শন করা হচ্ছে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেদিটি আগের জায়গায় অক্ষত রাখার আবেদন জানান তিনি।
বিষয়টি আমলে নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। আদালতের আদেশে বলা হয়, ‘বাদীর নালিশি অভিযোগের শুনানি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টুকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাট পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ‘বাদীর নালিশি অভিযোগে লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়রকে শোকজ নোটিশের পর এবার আরেক অভিযোগে বেদি না সরানো এবং পুনর্নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য স্থিতাবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা চাই যেন কোনও পক্ষই আদালত অবমাননা না করে।’
লালমনিরহাট সিনিয়র সহকারী জজ (সদর) আদালতের নাজির নুরুজ্জামান আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ও মামলার বাদী সৈয়দ সুফি তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘শহীদ মিনারের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আদালতের রায়ে খুশি। রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে শহীদ মিনার ও মূল বেদি যাতে না সরানো হয় এবং কাজ বন্ধ রাখা হয়। যদি আদালতের আদেশ অমান্য করা হয়, তাহলে আদালত অবমাননার নালিশ করা হবে।’
আদালত ও লিগ্যাল নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট পৌরসভার সাপ্টানা মৌজার মাতৃ মঙ্গল কেন্দ্রের পাশে ১৯৭২ সালে ১৪.৫০ শতাংশ জমির উপর সড়কের পাশে জেলার দৃষ্টিনন্দন এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে জেলাবাসী বিভিন্ন কর্মসুচি এই শহীদ মিনারেই পালন করে আসছেন।