নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
করোনার কারণে আমাদের সকলের ঈদ আনন্দে ভাটা পড়লেও, ঘরে বসে পরিবারের সবার সাথে কিছুটা হলেও আনন্দ করতে পারছি। কিন্তু এদেশেই অন্য এক প্রান্তে মানুষের ঈদ আনন্দ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে প্রলয়ংকারি ঘূর্ণিঝড় আম্পান।
সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত সাতক্ষীরা উপকূলের বেড়িবাঁধগুলো। বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে নদীর জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে তলিয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষের বাসস্থান। এ কারণে ঈদ উপেক্ষা করে শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার মানুষ স্বেচ্ছা শ্রমে সোমবার সকাল থেকে বাঁধ নির্মাণে অংশ নেন।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘আগে তো বাঁচতে হবে। ইউনিয়নের অনেক এলাকায় পানি থই থই করছে। জোয়ার হলে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়। সেটা ঠেকাতে বাঁধ দেওয়া জরুরি। জোয়ার আসলে কাজ করা কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য এলাকাবাসীকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে যাচ্ছি।’
গাবুরার বাসিন্দারা বলেন, ‘দেশজুড়ে সবাই ঈদ করছে, কিন্তু আমাদের এবার আর ঈদ করা হল না। ঈদ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে যেটুকু বসতভিটা এখনো অবশিষ্ট আছে, একটু পড়ে তার চিহ্নও থাকবে না। কারণ, দুই ঘণ্টা পর আবারও জোয়ারের পানিতে পূর্ণ হবে লোকালয়। তার আগেই যদি বাঁধে কিছুক্ষণ কাজ করা যায়, তাহলে হয়তো বিপদ থেকে মুক্ত হওয়া যাবে। জোয়ার আসার আগে যদি বাঁধটা একটু উঁচু করা যায়, সেজন্য সবাই হাত লাগিয়েছেন।’
উল্লেখ্য যে, গত এক দশক ধরে ঘূর্ণিঝড় আইলার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষজন। এরই মধ্যে সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে ফের বাঁধ ভেঙে নোনা জলে তলিয়ে যায় সমগ্র দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকা। রমজান শেষে ঈদ এলেও মানবেতর জীবনযাপন করছেন এ অঞ্চলের অসহায়, দুস্থ ও প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা মানুষেরা।
সান নিউজ/ বি.এম.