নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে প্রাথমিক থেকে শুরু করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বেশকিছু গাইড লাইন মেনে আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে খুলতে পারে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রেখে বিদ্যালয়ে পাঠদান পরিচালনায় করণীয় বিষয়ক বিভিন্ন নির্দেশনা তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে মাস্ক পরা, হাত পরিষ্কার, থার্মোমিটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। সবাইকে সেসব মেনে চলতে হবে। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য নিরাপত্তামূলক এমন ৫০টির বেশি নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।
জানা গেছে, করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এসব নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনেক অভিভাবক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাইবে না। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা তাই ৫০টি বেশি দিকনির্দেশনামূলক গাইডলাইন তৈরি করেছি। বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা এলেই তা বাস্তবায়ন শুরু হবে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) নির্দেশনাগুলো চূড়ান্ত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে খসড়া থেকে কিছু সংযোগ-বিয়োজন করা হয়েছে। পরবর্তী আরেকটি সভা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। পরবর্তীতে তা অনুমোদনের পরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এ বিষয়ে সূত্রটি জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আগের মতো আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালিত হবে না। বিদ্যালয় খোলার ১৫ দিন আগে থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রস্তুতি শুরু করা হবে। ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করণীয় ও প্রতিদিন কীভাবে ক্লাস পরিচালনা করা হবে সেসব বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে।
আরও জানা গেছে, বিদ্যালয় খোলার সরকারি নির্দেশনা আসার পর ন্যূনতম ১৫ দিন আগে শিক্ষক, কর্মচারী এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ক্লাস উপযোগী করে বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন করে তুলতে হবে। বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলের গেটে বা প্রবেশের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে প্রবেশ করবে। থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মেপে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানো হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া নির্দেশনা থেকে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য অনুসরণীয় নির্দেশনাগুলো চিহ্নিত করে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেবো। করোনা উত্তর সময়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া হবে।
যদিও অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা বলছেন, এই সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাটা হবে প্রাণঘাতী। তাদের মতে, আগে জীবন পরে শিক্ষা। তবে সরকার যে সিদ্ধান্তই নিক তা মানতে হবে।