ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনের উহান প্রদেশের সি ফুড মার্কেট থেকেই করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এতদিন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পরিষ্কার করে কিছু বলেনি।
তবে শুক্রবার (৮ মে) এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথমবার মুখ খুলেছে। তারা জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের নেপথ্যে উহানের ওই বাজারের স্পষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পিটার বেন এমবারেক বলেন, ‘সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে উহানের বাজারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছিল তা এখনও আমরা পরিষ্কার করে জানি না। হতে পারে সংক্রমণ কয়েকগুণ ছড়ানোর উপকরণ ওই বাজারে মজুত ছিল আবার এও হতে পারে এটা শুধুই কাকতালীয়।’
তার কথায়, ‘এটা এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না জীবজন্তুদের থেকেই ওই বাজারের দোকানদারদের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে কিনা।' উদাহরণ দিতে গিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্তা বলেন, ‘২০১২ সালে সৌদি আরবে মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। গবেষকদের প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল উৎস খুঁজে পেতে। ঊটের শরীরই যে ভাইরাসের আধার তা বুঝতে সময় লেগেছিল ১৪ মাস।’
অনেকের মতে, বাদুড় বা ওই জাতীয় প্রাণীর শরীর থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। কারও আবার দাবি, ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে চীন এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও অভিযোগ, উহানের ভায়রোলজি ল্যাবেই এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি এবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একই অভিযোগ করেন বেজিংয়ের বিরুদ্ধে। যদিও এ ব্যাপারে এদিনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, ল্যাবেই যে ভাইরাস তৈরি হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
চীনের এই বাজারের যে যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে করোনা সংক্রমণে তা বিশ্বের বহু দেশ বললেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এতদিন স্পষ্ট করে কিছুই বলেনি। পৃথিবীর একাধিক রাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ‘চীনের সুরে কথা বলাকে ভালোভাবে নেয়নি। মার্কিন অনুদান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওপর চাপ তৈরি হয়েছিল।
বিশ্লেষকের মতে, সেই চাপের ফলেই এতদিন পর উহানের বাজারের ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।