নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেষ হল মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০। এবারের বইমেলায় বিক্রি ছাড়িয়ে গেছে সব রেকর্ড। এবার বিক্রি হয়েছে মোট ৮২ কোটি টাকার বই।
বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, গতবারের চেয়ে এবার দুই কোটি টাকার বেশি বই বিক্রি হয়েছে। গত বছর মেলায় ৩০ দিনে ৮০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। এর আগে ২০১৮ সালের মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৭০ কোটি টাকার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করে বাংলা একাডেমির আয়োজনে গত ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল এই প্রাণের মেলা। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের বই উৎসবের।
বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, এবারের মেলায় নতুন বই এসেছে ৪ হাজার ৯১৯টি। এর সিংহভাগই ছিল কবিতার বই। এরপরে আছে উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ। বাংলা একাডেমির বিচারে এবার মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা ৭৫১টি।
এবারের মেলার আলোচিত ও সর্বাধিক বিক্রীত বই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা 'আমার দেখা নয়াচীন’। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বইটি মেলায় দ্বিতীয় সংস্করণও বিক্রি হয়ে গেছে।
এবারই প্রথম শিশু চত্বর এবং লিটল ম্যাগাজিন চত্বর বাংলা একাডেমি থেকে সরিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাজানো হয়েছিল।
মেলায় লোকসমাগম ছিল গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশি। বিক্রিও হয়েছে ভালো। আর এবার গিনেজ বুকে নাম লেখাতে চায় অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এজন্য বইপ্রেমীর সঠিক সংখ্যার নির্ধারণে বাংলা একাডেমির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
শনিবার সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অনুরোধ জানান তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে এত দীর্ঘ সময় ধরে হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলা নিয়ে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় না। এটি একমাত্র আমাদের দেশে হয়। বাংলা একাডেমির কাছে আমার অনুরোধ, বইপ্রেমীর এই সংখ্যাটা যাতে নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা হয়, যাতে আমরা গিনেজ বুক অব রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।’
আগামী দিনে অমর একুশে গ্রন্থমেলার নাম অমর একুশে বইমেলা হবে বলে জানান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া বাইশে নভেম্বর আন্তর্জাতিক বইমেলা করতে যাচ্ছি। সে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কলকাতা বইমেলা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা হবে। এটা আমাদের জন্য পরম পাওয়া।'
তিনি আরো বলেন, 'বইয়ের পাঠক লেখক প্রকাশক বেড়েছে, তবে মানসম্মত বই গতবারের চেয়ে কমেছে। সামনের বার আমরা এ বিষয়টি নিয়ে পরিকল্পতভাবে এগোবো।'
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘বই যেন সবার নিত্যসঙ্গী হয়। এবারের মেলা আমরা চেষ্টা করেছি সর্বাঙ্গীন সুন্দর রাখতে। এত মানুষের মিলনমেলা কিছু তুটি থাকতেই পারে। আমরা আগামীতে আরও নির্ভুল করার চেষ্টা করব।'
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অমর একুশে গ্রন্থমেলার আহ্বায়ক ড. জালাল আহমেদ প্রমুখ।